সালাম আপনাদের সবাইকে আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন আজকে আপনাদের জন্য সূরা ফালাক ও সূরা নাস কোরআন শরীফের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সূরা সাধারণত নামাজ পড়ার সময় সূরা গুলা ব্যবহার করা হয় আপনারা এখান থেকে এগুলা নিয়ে নিতে পারেন |আমার দ্বীনী ভাই ও বোনেরা আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিরাও আপনাদের দোয়া ও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রিয় ভাই ও বোনেরা আজ আমরা আপনাদের মাঝে নিয়ে আসলাম সূরা ফালাক ও সূরা নাস, সূরা নাস সূরা ফালাক, সূরা ফালাক mp3 download, ফালাক সূরা, সূরা ফালাক mp3, সূরা ফালাক ও নাস এর ফজিলত, সূরা ফালাক তেলাওয়াত, সূরা ফালাক সূরা নাস, সূরা ফালাক, সূরা ফালাক এর তাফসীর, সূরা ফালাক অর্থসহ আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি ধৈর্য সহকারে পড়বেন এবং সঠিক তথ্যটি পাবেন।
সূরা ফালাক mp3 download | সূরা ফালাক mp3
ফালাক সূরা
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ
قُلْ اَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِۙ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَۙ وَ مِنْ شَرِّ غَاسِقٍ اِذَا وَقَبَۙ وَ مِنْ شَرِّ النَّفّٰثٰتِ فِی الْعُقَدِۙ وَ مِنْ شَرِّ حَاسِدٍ اِذَا حَسَدَ۠
বাংলা উচ্চারণঃ কুল আ‘ঊযুবিরাব্বিল ফালাক। মিন শাররি মা-খালাক। ওয়া মিন শাররি গা-ছিকিন ইযা-ওয়াকাব। ওয়া মিন শাররিন নাফফা-ছা-তি ফিল ‘উকাদ। ওয়া মিন শাররি হা-ছিদিন ইযা-হাছাদ।
সূরা ফালাক ও নাস এর ফজিলত
১) হযরত উকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :‘তুমি কি দেখনি আজ রাতে অবতীর্ণ হয়েছে এমন কিছু আয়াত, যেরূপ আয়াত আর লক্ষ্য করা যায়নি? তা হল সূরা ফালাক ও সূরা নাস।” (সহীহ মুসলিম)
২) ইমাম নাসায়ী রহ. বর্ণনা করেন : রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উকবা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে নির্দেশ দিলেন, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করার জন্য। তারপর তিনি বললেন, এ দু’টি সূরার ন্যায় অন্য কোন জিনিসের মাধ্যমে কেউ প্রার্থনা করেনি, আর এ দু’টি সূরার ন্যায় অন্য কোন জিনিসের মাধ্যমে কেউ আশ্রয় প্রার্থনা করেনি।”(সুনানে নাসাঈ)
৩) হযরত আবু সাঈদ খুদরী ( রাঃ) হতে বর্ণিত,তিনি বলেন ‘রাসূলুল্লাহ (সূরা ফালাক্ক ও নাস অবতীর্ণ হবার পূর্ব পর্যন্ত নিজ ভাষাতে) জিন ও বদ নজর থেকে (আল্লাহর) আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। পরিশেষে যখন উক্ত সূরা দু’ টি অবতীর্ণ হল, তখন ঐ সূরা দু’টি দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করতে লাগলেন এবং অন্যান্য সব পরিহার করলেন’ʼ। (জামে আত তিরমিজী)
সূরা ফালাক তেলাওয়াত
সূরা ফালাক সূরা নাস
সূরা ফালাক:-
কুল আ‘ঊযুবিরাব্বিল ফালাক। মিন শাররি মা-খালাক। ওয়া মিন শাররি গা-ছিকিন ইযা-ওয়াকাব। ওয়া মিন শাররিন নাফফা-ছা-তি ফিল ‘উকাদ। ওয়া মিন শাররি হা-ছিদিন ইযা-হাছাদ।
সূরা নাস:-
বাংলা উচ্চারণঃ কুল আ‘ঊযুবিরাব্বিন্না-ছ। মালিকিন্না-ছ। ইলা-হিন্না-ছ। মিন শাররিল ওয়াছ ওয়া-ছিল খান্না-ছ। আল্লাযী ইউওয়াছবিছুফী সুদূরিন্নাছ। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্না-ছ।
সূরা ফালাক এর তাফসীর
এটি একটি মাদানী সূরা। এই সূরাটি মানুষের কুসংস্কার ও ভয়ের প্রতিশোধক। এই সূরাতে শিক্ষা দেয়া হয়েছে যে, মানুষের থেকে অনিষ্টের ভয়, এবং অন্ধকারে যারা পদচারণা করে তাদের ভয় এবং মন্দ ও দুষ্টের ষড়যন্ত্রের ভয়, এবং হিংসা ও দ্বেষের ভয় ইত্যাদি বিভিন্ন ভয় থেকে আল্লাহ্র আশ্রয় প্রার্থনা করতে।
“সূরা ফালাক বা ঊষাʼʼ ১১৩
৫ আয়াত, ১ রুকু, মাদানী
(দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে)
১। বল, আমি ঊষার আলোর প্রভুর আশ্রয় প্রার্থনা করছি, ৬৩০১, ৬৩০২
৬৩০১। আল্লাহ্র সৃষ্টি জগতে ভালো ও মন্দ এই দ্বিবিধ শক্তির ধারা পাশাপাশি বিরাজমান। ভালো ও কল্যাণের শক্তিকে আলোর সাথে তুলনীয়, অপর পক্ষে মন্দ বা অমঙ্গলের শক্তিকে অন্ধকারের সাথে তুলনীয়। গভীর রাত্রির অন্ধকার যেরূপ ঊষার আগমনে বিদূরীত হয়, ঠিক সেরূপ অমঙ্গলের অন্ধকার বিদীর্ণ করে মঙ্গলের আলোক রশ্মী বিচ্ছুরিত করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ্র (৬ : ৯৬)
সুতারাং আমাদের ভয়ের কিছুই নাই যদি আমরা সেই মহাশক্তিধর প্রভুর স্মরণাপন্ন হতে পারি।
৬৩০২। “Falaqʼʼ – অর্থ ঊষা, ভোর, দিনের প্রথম সূচনা, রাত্রির অন্ধকারকে বিদীর্ণ করে প্রথম আলোক রেখার বিচ্ছুরণ। এই উপমাটির দ্বারা বিভিন্ন অর্থকে বুঝানো হয়ঃ-
১) সুদীর্ঘ রাত্রি শেষে; রাত্রির অন্ধকার বিদীর্ণ হয় প্রথম আলোর রশ্মী ঊষার আগমন ঘোষণা করে।
২) অজ্ঞতার অন্ধকার যখন সমগ্র আত্মাকে আচ্ছাদিত করে ফেলে, আল্লাহ্র হেদায়েতের আলো তখন সেই সূচীভেদ্য অন্ধকারকে বিদীর্ণ করে আত্মাকে আলোকিত করে (২৪ : ৩৫)
৩) “অন্ধকার অস্থায়ীʼʼ। কর্মচঞ্চল জীবনকে আলোর প্রতীক হিসেবে কল্পনা করা যায়। আর এই জীবনের মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে আল্লাহ্র হেদায়েতের আলো।ʼʼ
“ঊষার আলোর প্রভুʼʼ বাক্যটি দ্বারা আল্লাহ্র হেদায়েতের এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যমন্ডলীকে তুলে ধরা হয়েছে। যদি আমরা আমাদের সর্ব অস্তিত্বের জন্য, বিপদ বিপর্যয়ে শুধুমাত্র এক আল্লাহ্র শরণাপন্ন হই, তবে আমাদের সকল অজ্ঞতা, দূর হয়ে যাবে এবং আমরা কুসংস্কার ও সকল অমঙ্গলের ভয় থেকে মুক্ত থাকতে পারবো; ঠিক সেই ভাবে যে ভাবে পৃথিবী ঊষার আলোক দ্বারা রাত্রির অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়।
২। যা তিনি সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে ৬৩০৩;
৬৩০৩। দেখুন উপরের টিকা ৬৩০১। আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস আমাদের সর্ব অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবে, সকল বিপদ থেকে মুক্ত রাখবে, সকল অকল্যাণ থেকে নিরাপদ রাখবে। পৃথিবীর জীবনে সাধারণভাবে আমরা যে সব বিপদ ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হই সেগুলিকে তিনটি শ্রেণীতে নিচের আয়াত সমূহে শ্রেণীভূক্ত করা হয়েছে:-
১) প্রত্যক্ষ “অনিষ্ট ও বিপদʼʼ যা দ্বারা মানুষ সরাসরি কষ্ট পায়। একেই সূচিত করা হয়েছে ‘রাত্রির’ দ্বারা যখন তা গভীর অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয় কারণ রাত্রি যখন গভীর হয় তখনই ক্ষতির সম্ভাবনা বেশী হয়। “অর্থাৎʼʼ অপরাধ জগৎ দ্বারা।
২) “মুসীবতʼʼ বা বিপর্যয় এটার কারণ অনেক সময়ে দৃষ্টিগোচর হয় না ; একে সূচিত করা হয়েছে “যারা গ্রন্থিতে ফুৎকার দেয়ʼʼ বাক্যটি দ্বারা। এর দ্বারা যাদু-টোনাকে বুঝানো হয় -যে ক্ষতি ক্ষতিগ্রস্থদের অগোচরে ঘটে থাকে। বৃহত্তর অর্থে বুঝানো হয়েছে সেই সব বিপর্যয় যা ব্যক্তির নিজস্ব ক্ষমতার বাইরে যেমন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগʼʼ।
৩) “হিংসুকের হিংসার আগুন থেকে আল্লাহ্র আশ্রয় চাওয়া হয়েছে।ʼʼ
৩। “(রাত্রির)ʼʼ অন্ধকার থেকে, যখন তা চারিদিকে বিস্তৃত হয়, ৬৩০৪,
৬৩০৪। রাত্রি যখন গভীর “ অন্ধকারে ʼʼ আচ্ছন্ন হয়, সেই অন্ধকারের মাঝে নিহিত থাকে অপরাধ জগতের বিস্তার ও বিভিন্ন বিপদের সম্ভাবনা।ʼʼ অনেক লোক আছে যারা নিশিত রাত্রির গভীর অন্ধকারকে ভয় পায়, তবে সব লোকই অন্ধকারে যে অপরাধ জগত বিস্তার লাভ করে তার ক্ষতি ও বিপদ বিপর্যয়কে ভয় পায়।ʼʼ আমাদের এই আয়াতে বলা হয়েছে আমাদের ভয় পাওয়ার কারণ নাই।ʼʼ অন্ধকারের ক্ষতি থেকে রক্ষার উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে আল্লাহ্র আশ্রয় প্রার্থনা করতে বলা হয়েছেʼʼ। যে আশ্রয় আমাদের সর্বপ্রকার ক্ষতি থেকে রক্ষা করবে।
৪। এবং যারা যাদু কাজে অভ্যস্ত, তাদের বিপর্যয় সৃষ্টিকারী গ্রন্থি ফুৎকার থেকে ৬৩০৫,
৬৩০৫। “ গ্রন্থিতে ফুৎকার দেয় ʼʼ বাক্যটি দ্বারা যারা যাদু টোনা করে সেই সব ডাইনীদের বুঝানো হয়েছে। যাদু টোনার প্রভাব হচ্ছে মনোজগতের উপরে। তবে এর অর্থ সীমাবদ্ধভাবে গ্রহণ না করে ব্যপক অর্থে গ্রহণ করা উচিতʼʼ। জীবনের কর্মক্ষেত্রে যে বস্তুসমূহ বা ঘটনা সমূহ আমাদের মনোজগতের বিপর্যয় সৃষ্টি করে, যার ফলে আমরা বিপথে পরিচালিত হই এবং মনোজগতের শান্তি নষ্ট করি, ব্যপক অর্থে তা সবই হচ্ছে “গ্রন্থিতে ফুৎকারেরʼʼ ন্যায় ক্ষতিকর। এগুলি হতে পারে অপরের গোপন ষড়যন্ত্র, মানসিক অত্যাচার, বিলাস ব্যসনের সামগ্রীর সম্মোহনী শক্তি “(যার বর্ণনা আছে ৩ : ১৪ আয়াতে)ʼʼ অথবা মিথ্যা গুজব বা চরিত্র হননকারী কুৎসা ইত্যাদি বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহ যা মানুষকে সঠিক রাস্তায় চলতে বাঁধার সৃষ্টি করে অথবা মানসিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করে। ফলে তাঁর অন্তরের প্রশান্তি নষ্ট হয়। জীবনের চলার পথে এরূপ বহু ঘটনা থাকে যা আমাদের চিন্তার জগতকে অধিকার করে মানসিক বিপর্যয় ঘটায়। এরূপ ক্ষেত্রে আল্লাহ্র সাহায্য প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে।ʼʼ
৫। এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে, যখন তারা হিংসা করে ৬৩০৬।
৬৩০৬। হিংসা রীপুকে আগুনের সাথে তুলনা করা হয়। হিংসুক ব্যক্তি যাকে হিংসা করে তার ধ্বংস কামনা করে ঠিক সেই ভাবে, যেভাবে আগুন কোন জিনিষকে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। সে ক্ষেত্রে হিংসুকের অন্তর থাকে যৎপরনাস্তি বিদ্বেষে ও ঈর্ষাতে পরিপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে এই হিংসার দাবানল থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে আল্লাহ্র নিরাপদ আশ্রয়।ʼʼ
সূরা ফালাক অর্থসহ | সূরা ফালাক
১. কুল আ‘ঊযুবিরাব্বিল ফালাক
২. মিন শাররি মা-খালাক।
৩. ওয়া মিন শাররি গা-ছিকিন ইযা-ওয়াকাব।
৪. ওয়া মিন শাররিন নাফফা-ছা-তি ফিল ‘উকাদ।
৫. ওয়া মিন শাররি হা-ছিদিন ইযা-হাছাদ।
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ
قُلْ اَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِۙ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَۙ وَ مِنْ شَرِّ غَاسِقٍ اِذَا وَقَبَۙ وَ مِنْ شَرِّ النَّفّٰثٰتِ فِی الْعُقَدِۙ وَ مِنْ شَرِّ حَاسِدٍ اِذَا حَسَدَ۠
অর্থ:-
১. বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার,
২. তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার অনিষ্ট থেকে,
৩. অন্ধকার রাত্রির অনিষ্ট থেকে, যখন তা সমাগত হয়,
৪. গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে জাদুকারিনীদের অনিষ্ট থেকে
৫. এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে।
Tag:- সূরা ফালাক ও সূরা নাস, সূরা নাস সূরা ফালাক, সূরা ফালাক mp3 download, ফালাক সূরা, সূরা ফালাক mp3, সূরা ফালাক ও নাস এর ফজিলত, সূরা ফালাক তেলাওয়াত, সূরা ফালাক সূরা নাস, সূরা ফালাক, সূরা ফালাক এর তাফসীর, সূরা ফালাক অর্থসহ