প্রিয় পাঠকবৃন্দ বাংলা ইমেজ এর পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আসা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের জন্য নিয়ে আসলাম সুরা ফাতিহা বাংলা অর্থ, সূরা ফাতিহা অর্থ সহ, সূরা ফাতিহা এর বাংলা অর্থ, ফাতিহা অর্থ কি, সূরা ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ, সূরা ফাতিহা বাংলা অর্থ, ফাতিহা শব্দের অর্থ কি? আশা করি আমাদের দেওয়া পোস্টটি ধৈর্য সহকারে পড়বেন এবং সঠিক তথ্যটি পাবেন।
সূরা ফাতিহা বাংলা অর্থ
ফাতিহা অর্থ কী
সূরা ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ
২. الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
৩. الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
৪. مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ
৫. إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
৭. صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ
২. আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আ’-লামি-ন।
৩. আররাহমা-নির রাহি-ম।
৪. মা-লিকি ইয়াওমিদ্দি-ন।
৫. ইয়্যা-কা না’বুদু ওয়া ইয়্যা-কা নাসতাই’-ন
৭. সিরাতা’ল্লা যি-না আনআ’মতা আ’লাইহিম গা’ইরিল মাগ’দু’বি আ’লাইহিম ওয়ালা দ্দ—ল্লি-ন।
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)।
১. যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগত সমূহের প্রতিপালক।
২. যিনি পরম দয়ালু ও করুণাময়।
৩. যিনি বিচার দিবসের মালিক।
৫. তুমি আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর।
৬. এমন ব্যক্তিদের পথ, যাদেরকে তুমি পুরস্কৃত করেছ।
৭. তাদের পথ নয়, যারা অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্ট হয়েছে।
(আমীন! তুমি কবুল কর!)
সূরা ফাতিহা এর বাংলা অর্থ
(আমীন! তুমি কবুল কর!)
ফাতিহা শব্দের অর্থ কি
সুরা ফাতিহা কোরআন মজিদের প্রথম ও সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সুরা। ‘ফাতিহা’ শব্দের অর্থ হচ্ছে ভূমিকা, প্রারম্ভিকা। সুরা ফাতিহাকে উম্মুল কোরআন বলা হয়। উম্মুল-এর আভিধানিক অর্থ ‘মা’ বা ‘জননী’। কোরআনের সারমর্ম বলা হয় এই সুরাকে। আল্লাহর কাছে সুরাটি এতটাই প্রিয় যে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য এই সুরা পড়া ফরজ করে দিয়েছেন। প্রত্যেক মুসলমানের সুরা ফাতিহা মুখস্থ থাকে, কারণ এই সুরা পড়া ছাড়া নামাজ হয় না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি নামাজে সুরা ফাতিহা পাঠ করল না, তার সালাত অপূর্ণাঙ্গ রয়ে গেল। মিশকাত: ৮২৩
> অর্থের দিক থেকে সুরা ফাতিহার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। এই সুরার সাতটি আয়াতের মধ্যে প্রথম তিনটি আয়াতে আমরা পাই আল্লাহর পরিচয়। আর শেষ তিন আয়াতে আমরা পাই আল্লাহর কাছে আমাদের চাওয়া।
> আল্লাহর পরিচয় হিসেবে পাই, স্নেহ-মমতার সঙ্গে যিনি পরম দয়ালু। তিনি যেহেতু এত দয়ালু, তিনি আমাদের মাফ করে দেবেন, অর্থাৎ তিনি বিচার দিবসের মালিক। আল্লাহ ন্যায়বিচার করবেন। শেষ তিন আয়াতে বলা হচ্ছে, ‘তুমি আমাদের সরল পথ দেখাও, তাঁদের (নবী-রাসুলের) পথ। যাঁদের প্রতি তুমি অনুগ্রহ করেছ, আর যাদের ওপর তোমার গজব পড়েনি এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়নি।’ এই অংশটি হলো আল্লাহর কাছে আমাদের চাওয়া। তাহলে প্রথম অংশে আমরা আল্লাহর পরিচয় পেলাম, শেষ অংশে আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের চাওয়া পেশ করলাম। আর এই দুই অংশের মধ্যে একটি আয়াত ইয়া কানা বুদু ইয়া কানাস্তাইন, কেবল আমরাই একমাত্র তোমারই ইবাদত করি, একমাত্র তোমার কাছে সাহায্য চাই। এই আয়াতকে বলতে পারি, আল্লাহর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক। বেশি করে আল্লাহর ইবাদত করা এবং তাঁর কাছে চাওয়া।
> হজরত আলী (রা.) বলেছেন, কোনো বিপদে পতিত ব্যক্তি এক হাজারবার সুরা ফাতিহা পাঠ করলে ওই ব্যক্তির আর বিপদ থাকতে পারে না। হজরত ইমাম জাফর সাদেক (রা.) বলেছেন, ‘৪১ বার সুরা ফাতিহা পাঠ করে পানিতে ফুঁক দিয়ে কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে খাওয়ালে তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন।’ (তাওয়ারিখে মদিনা)
> কোরআন শরিফে সুরা ফাতিহার পরে সুরা বাকারা। সুরা বাকারার শুরুতে পাই, এটি আল্লাহর কিতাব, এর মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই, এটি হেদায়েতপ্রাপ্ত সেই মুত্তাকিদের জন্য। সুরা ফাতিহাতে আমরা দোয়া চাচ্ছি আল্লাহ তাআলার কাছে। সুরা ফাতিহাতে আমাদের প্রার্থনা। আর বাকি কোরআন শরিফ যেন প্রার্থনার উত্তর। এ কারণে আমরা যখন নামাজে দাঁড়াই, সুরা ফাতিহা পাঠ করে অন্য সুরা মেলাই, তখন আমাদের নামাজ কথোপকথনে রূপান্তরিত হয়। সুরা ফাতিহা পাঠ করার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে হেদায়েত চাচ্ছি, অন্য সুরা পাঠ করার কারণে সেই চাওয়ার উত্তর পাচ্ছি।
> মনে করুন, আপনি নামাজে সুরা ফাতিহা পাঠ করলেন এবং অন্য একটি সুরা মেলানোর ক্ষেত্রে সুরা ইখলাস পড়লেন। সেই ক্ষেত্রে সেই রাকঅাতে আপনি আল্লাহর কাছে হেদায়েত চাইলেন, সুরা ফাতিহা পাঠ করলেন এবং সুরা ইখলাসে আল্লাহ তাঁর নিজের পরিচয় জানান দিয়ে আপনাকে হেদায়েত দিলেন। হাদিসে কুদসিতে পাই, আমার বান্দা যখন বলে ‘আলহামদুলিল্লাহহি রাব্বিল আলামিন’, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছেএবং আপনি মুখ থেকে উচ্চারণ করলেন আলহামদুলিল্লাহহি রাব্বিল আলামিন, আপনার এই উচ্চারণ শুনে আল্লাহ এতটাই খুশি হলেন এবং এতটাই গর্বিত বোধ করলেন, তিনি তাঁর ফেরেশতাদের বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। এবং পরে আমরা যখন বলি আর রাহমানির রাহিম, আল্লাহ বলেন আমার বান্দা আমার গুণাবলি বর্ণনা করেছে। আমরা যখন বলি মালিক ইয়াও মিদ্দিন, আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার মাহাত্ম্য বর্ণনা করছে; এরপর আমরা বলি ইয়া কানা বুদু ইয়া কানাস্তাইন। আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি, একমাত্র তোমারই সাহায্য চাই। আল্লাহ বলেন, এটা আমার আর আমার বান্দার ব্যাপার, বান্দা যা চাইবে তা-ই সে পাইবে। এরপর আমরা মূল্যবান জিনিসটা চাই, আমরা বলি তুমি আমাদের সরল পথ দেখাও। তাঁদের পথ, যাঁদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ দান করেছেন, যাঁরা গজবপ্রাপ্ত নন, পথভ্রষ্ট নন। আল্লাহ বলেন, এটা কেবল আমার বান্দার জন্য, আমার বান্দা যা চাইবে তা-ই পাবে।
আমরা নামাজে দাঁড়িয়ে সুরা ফাতিহা পাঠ করব, মনে করব এটাই সবচেয়ে বড় নিয়ামত। কারণ, এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে কথোপকথনের সুযোগ পাচ্ছি। আমরা এই কথোপকথনের মাধ্যমে তাঁর নৈকট্য লাভ করার চেষ্টা করি।
সূরা ফাতিহা এর বাংলা অর্থ
আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আ’-লামি-ন। আররাহমা-নির রাহি-ম। মা-লিকি ইয়াওমিদ্দি-ন। ইয়্যা-কা না’বুদু ওয়া ইয়্যা-কা নাসতাই’-ন। ইহদিনাস সিরাতা’ল মুসতাকি’-ম। সিরাতা’ল্লা যি-না আনআ’মতা আ’লাইহিম গা’ইরিল মাগ’দু’বি আ’লাইহিম ওয়ালা দ্দ—ল্লি-ন।
অর্থঃ পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)। যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগত সমূহের প্রতিপালক। যিনি পরম দয়ালু ও করুণাময়। যিনি বিচার দিবসের মালিক। আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং একমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। তুমি আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর। এমন ব্যক্তিদের পথ, যাদেরকে তুমি পুরস্কৃত করেছ। তাদের পথ নয়, যারা অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্ট হয়েছে।
(আমীন! তুমি কবুল কর!)